সিলেট কদমতলি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছাদে ফাটল

প্রথম পাতা » জাতীয় » সিলেট কদমতলি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছাদে ফাটল
সোমবার ● ৮ মে ২০২৩


সিলেট কদমতলি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছাদে ফাটলনবনির্মিত কদমতলী বাস টার্মিনাল ভবনের বাইরের ওয়ালের উপরের অংশে ফাটলের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। শনিবার (৬ মে) প্রতিবেদনটি জমা দেয় তদন্ত কমিটি।

কমিটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণে ত্রুটি ধরা পড়েছে। নকশা জনিত ত্রুটির কারণে ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি খোলাসা করবেন সিসিক মেয়র।

সিলেটের নবনির্মিত কদমতলী বাস টার্মিনালের ত্রুটি তদন্তে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমকে আহবায়ক করে ৬ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি ঘোষণা করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)।

সিলেটের নবনির্মিত কদমতলী বাস টার্মিনালের ত্রুটি তদন্তে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমকে আহবায়ক করে ৬ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি ঘোষণা করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)।

জানা যায়, নবনির্মিত কদমতলী বাস টার্মিনাল ভবনের বাইরের ওয়ালের উপরের অংশে ফাটল দেখা দেয়ার পর গত মাসের ১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে সিসিক মেয়র বাস টার্মিনাল নির্মাণে ত্রুটি রয়েছে কী না তা অনুসন্ধানে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। যেখানে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন তিনি। দশদিনে জমা না দিলেও পুরো ৩৬ দিন পর প্রতিবেদন জমা পড়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমকে আহবায়ক করে ৬ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, এলজিইডি সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জে এম আজাদ হোসেন, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল হাকিম, সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ূন কবীর। আজ শনিবার তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছেন তার। এ বিষয়ে এখনি বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। দুই-একদিনের মধ্যে মেয়র মহোদয় সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলবেন।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডালি কনস্ট্রাকশনের সিনিয়র প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, এই প্রকল্পটি এখনো সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয় নি। উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমান বাস টার্মিনালটিতে সুযোগ সুবিধা সমূহ ঠিক আছে কি না তা পর্যবেক্ষনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সেবা প্রদান শুরু হচ্ছিল। এরই মধ্যে স্থাপনাটির একটি অংশে কিছু ত্রুটি দেখা যায়। তবে এটি মূল ভিত্তিতে নয়। মূল ভিত্তির বাহিরের দিকে একটি অংশ। সম্ভবত সে অংশের মাটি সামান্য ডেবে গেছে তাই এমনটা হয়েছে। এটি গুরুতর কোন সমস্যা না।

ফাটল প্রসঙ্গে টার্মিনালের নকশা করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের তিন শিক্ষকের একজন সুব্রত দাস বলেন, স্থাপনায় বেশ কয়েকটি অংশ থাকে। যার মধ্যে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, প্লাম্বিং এই পাঁচটি অংশ থাকে। টার্মিনালের যে ফাটল সেটি মূল যে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন আছে তাতে নয়। এটি পার্টিশন দেয়ালের ত্রুটি। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি মূল ভিত্তিতে আঘাত আনতে পারে।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায় জানান, তদন্ত প্রতিবেদন শনিবার জমা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখনই কিছু জানানো যাবেনা।

উল্লেখ, ২০১৮ সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের আওতায় সিসিকের উদ্যোগে ৮ একর ভূমিতে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটির কাজ শুরু হয়, পরে তা বেড়ে ৬৭ কোটি টাকাতে গিয়ে দাড়ায়। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কদমতলী বাস টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করা হয়।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে গত ১৫ জানুয়ারি সিলেটের কদমতলি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়। চালু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই টার্মিনালের ছাদের একটি অংশে ফাটল ধরা পরে।

আধুনিকতার মিশেলে নির্মিত এই বাস টার্মিনালের নকশা করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের তিন শিক্ষক সুব্রত দাশ, রবিন দে ও মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৩:১৯ ● ১৮৭ বার পঠিত




আর্কাইভ