কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় ড্রেন ও ফুটপাত দখল : মৌলভীবাজারে অবৈধ দোকানে ক্ষোব্ধ পৌরবাসী

প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি » কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় ড্রেন ও ফুটপাত দখল : মৌলভীবাজারে অবৈধ দোকানে ক্ষোব্ধ পৌরবাসী
শনিবার ● ২৭ মে ২০২৩


মৌলভীবাজারে অবৈধ দোকানে পথচারিদের চলাচল বিঘ্নিতনিজস্ব প্রতিবেদক:
মৌলভীবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌমোহনা এলাকায় আদালত সড়কের পশ্চিম পাশে ব্যন্ততম সড়কের পাশের ড্রেন ও ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মাণ করায় পথচারিদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিমালার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় জনতা ব্যাংক প্রধান শাখা মৌলভীবাজার ও একই ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখার ভাড়াটিয়া বিল্ডিংয়ের বাইরের দিকের ফুটপাত ও ড্রেন দখল করে মূল ভবনের বাইরের দিকে মুখ করে দোকান কোটা নির্মাণ করেছে একটি মহল। একই দালানের একপাশে নিচ তলায় উত্তর পাশে রয়েছে স্বাদ কনফেকশনারী মৌলভীবাজার শাখা এবং দক্ষিণ পাশে জনতা ব্যাংক প্রধান শাখা। একই দালানের ২য় তলায় উত্তর পাশে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখা এবং ২য় তলার দক্ষিণ পাশে রয়েছে জনতা ব্যাংক আঞ্চলিক শাখা কার্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান গুলোর পাশে আদালত সড়কের ফুটপাত দিয়ে সাধারণ পথচারি ছাড়াও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী-শিক্ষক ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষ স্বাচ্ছন্দে প্রয়োজনীয় যাতায়াত করতেন। গত রমজানের পর হঠাৎ করে কতিপয় ব্যক্তি ফুটপাত ও ড্রেন দখল করে অপরিকল্পিত ভাবে মূল দালানের বাইরে দোকান কোটা নির্মাণ করে সেখানে ভাই ভাই ফল ভান্ডার নামে ফলের দোকান খোলে বসেছে। এতে ফুটপাত দিয়ে মানুষের চলাচল দুস্কর হয়ে পড়ছে। তাছড়া এখানে ড্রেন দখল করা হয়েছে। এতে দোকানের পরিত্যক্ত পলিথিন কার্টন ব্যগ ইত্যাদি সহজেই ড্রেন ফেলা হচ্ছে। এতে ড্রেনের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এখন বর্ষাকাল হওয়াতে সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এবং অনেক সময় ড্রেনের পানি উপচে সড়কের উপরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

ক্ষোব্ধ পৌরবাসীএ কারণে সাধারণের চলাচল মারাত্ক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ১৯৯৬-এর ৮ নং ধারায় বলা হয়েছে ইমারতের সাইট সংলগ্ন রাস্তা ও তার পার্শবর্তী ফুটপাত এবং ড্রেন হইতে ইমারতের দূরত্ব (১) ইমারতের সাইট সংলগ্ন অথবা সাইটের সহিত সংযোগকারী সরকারি রাস্তা হইতে অন্যূন ৩ দশমিক ৬৫ মিটার প্রশস্ত রাস্তা থাকিতে হইবে অর্থাৎ ৩ দশমিক ৬৫ মিটার রাস্তার পরে ফুটপাত এবং ড্রেনের জায়গা রেখে ইমারত নির্মাণ করতে হবে। এই আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গালী প্রদর্শন করে অতীতে এই মূল দালানটি নির্মাণ করা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এই দালান মালিকে বিরুদ্ধে কোন আইনী প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।তাছাড়া আদালত সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের মালিকানাধীনেএই সড়কটি ঢাকা-মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট ও ঢাকা-মৌলভীবাজার-বড়লেখা-বিয়ানীবাজার মহাসড়কসহ দেশের অন্তত ১০টি রুটের দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করে থাকে এই মহাসড়ক দিয়ে। মহাসড়ক আইনের সংল্লিষ্ট ধারায় বলা আছে যানবাহন চলাচলের প্রয়োজনীয় স্থান রাখার পর শহর অংশে পর্যাপ্ জায়গা রেখে স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে। এই আইনেরও এখানে কোন প্রয়োগ নেই। তাছাড়া এই মহাসড়কটি মৌলভীবাজার পৌরশহরের ব্যস্ততম হলেও সড়ক সেতু মহাসড়ক আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে সরকারি জায়গার দিকে বাড়িয়ে দোকান নির্মাণ ও পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।মৌলভীবাজার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের অন্তরভৃক্ত এই স্থানটিকে ফুটপাত ও ড্রেনের উপর দখল করে দোকান স্থাপন করা প্রসংঙ্গে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালেহ আহমদ পাপ্পু বলেন, ফুটপাতের পাশ ঘেষে এবং ড্রেন দখল করে দোকান স্থাপন করার ঘটনাটি আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে বিধায় আমরা অথাৎ পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো লাইন্সেস প্রদান করিনি । স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌরসভার আইন অনুযায়ি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৌলভীবাজার পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে শহরের অলিগলি পাড়া-মহল্লার রাস্তা প্রস্বস্ত করন ও ড্রেন কালবাট নির্মাণ করে পৌরসভা এলাকাকে একটি পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত করার কাজ এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে মেয়র অনেক প্রসংশা কুড়িয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে শহরের প্রাণ কেন্দ্র চৌমোহনা এলাকায় ড্রেন ও ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এ সকল অবৈধ কর্মকান্ড মেয়র ও পৌর পরিষদের সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এ প্রসঙ্গে মেয়রের দৃষ্টিআকর্ষন করা হলে মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, আমি শুনেছি কে বা কারা ফুটপাত ও ড্রেন দখল করে ফলের দোকান বসিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরকে আমি দায়িত্ব দিয়েছি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। সেই সঙ্গে তাদের লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। মেয়র বলেন, ফুটপাত ও ড্রেন দখল করে এই শহরে কেউ ফায়দা নিতে পারবে না। অচিরেই তাদের উচ্ছেদ করা হবে এবং স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫০:২৬ ● ৩০৬ বার পঠিত




আর্কাইভ