সাত দিনের মাথায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ‘মোটামুটি একটি নিরবচ্ছিন্ন’ জায়গায় নেয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, কিছুদিন আগে দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তারা ধারণা করেছিলেন ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সমাধান হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও সময়পোযোগী সিদ্ধান্তের কারণে সবার সহযোগিতায় মাত্র সাত দিনের মাথায় বিদ্যুৎকে মোটামুটি নিরবচ্ছিন্ন জায়গায় নিতে পেরেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা মাথায় রেখে সরকার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানসম্মত বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে জ্বালানি ক্ষেত্রে বিশাল বাধা এসেছে। নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী জ্বালানি পাওয়ার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশ অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনী জিনিসের দাম বেড়েছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে। তার মধ্যে থেকেও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
জ্বালানিতে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন ও সঞ্চালনকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০২৪ সাল নাগাদ ৪৬টি কূপ খননের মাধ্যমে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেগুলো হলো রিল্যাইবেলিটি, অ্যাফোর্ডেবিলিটি এবং নিরবচ্ছিন্ন পাওয়ার এনার্জি পাওয়া। এ জন্য কেবল অর্থ সংস্থান হলে হবে না; টেকনোলজি গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশ জ্বালানিব্যবস্থা কেমন হবে, তা নতুনভাবে চিন্তা করছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছে। কারণ তাদের প্রচুর জায়গা আছে।
নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে এটা করা কঠিন। স্টোরেজ ব্যাটারি করতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। তবে সরকার চেষ্টা করছে অন্তত বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১০ শতাংশ যেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি করা যায়। সেটা মাথায় রেখে নেপাল থেকে ৭০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চুক্তির জন্য সবকিছু তৈরি করা হয়েছে। সঞ্চালন লাইন করে আরেকটি দেশের ভেতর দিয়ে এভাবে বিদ্যুৎ আনতে পাঁচ থেকে আট বছর সময় লাগে। কিন্তু এখানে জ্বালানি খরচ ২০ বছর একই থাকবে, এ কারণে আনা হচ্ছে। ডিজেল, ফুয়েলের দামের তারতম্য হয়। এতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া কষ্টকর হয়।
ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বাজেটের ওপর আলোচনায় সরকারি দলের সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যে কারণে উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ে কুকি-চীন জঙ্গিরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সেনাবাহিনী তাদের অপতৎপরতা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। উন্নয়নের প্রধান বাধা হলো অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা ও তাদের আইনের আওতায় আনা দরকার।