সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। নগরীর ১৮টি ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস জানান, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ কেন্দ্র অনুযায়ী ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কেন্দ্রে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকা, কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কাসহ নানা দিক বিবেচনা করে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের স্বার্থে কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর থাকবেন।
এসএমপির তালিকা অনুযায়ী-৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৬, ৩৮, ৩৯ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সব ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। তবে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্র ঝুঁকিমুক্ত। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নির্বাচনের দিন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ৫২টি টিম মাঠে কাজ করবেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান জানান, রোববার রাত ১২টার পর থেকে সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ৪২টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টিম কাজ করবে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ১০টি টিম কাজ করবে। প্রতিটি টিমের সঙ্গে ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য থাকবে। সোমবার থেকে পরবর্তী ৩ দিন তারা মাঠে থাকবে।
এবার মেয়র পদে আটজন প্রার্থী রয়েছেন। তবে নির্বাচন বর্জন করে করেছেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। ৫৬টি কাউন্সিলর পদে ৩৬০ জন প্রার্থী থাকলেও অস্ত্রর মহড়া দেওয়ার অভিযোগে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭২ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এবার সিটির ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন। ১ হাজার ৩৬৭টি ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা : সিসিকের পঞ্চম নির্বাচন উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনি এলাকায় যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ। সহকারী সচিব জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে-সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী ভোটগ্রহণের আগের মধ্যরাত থেকে ভোটগ্রহণের মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রাক, পিকআপ এবং ইজিবাইক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়-রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের নির্বাচনি এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকের (পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে) ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।
এছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশে-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, জরুরি সেবা অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। এছাড়া জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যসব জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরকম নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারবেন।