সোমবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
মৌলভীবাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম শহীদের আপীল খারিজ করেছে নির্বাচন কমিশন
প্রথম পাতা » অনিয়ম-দুর্নীতি » মৌলভীবাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম শহীদের আপীল খারিজ করেছে নির্বাচন কমিশনমৌলভীবাজার-৩ (রাজনগর-মৌলভীবাজার সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ আব্দুর রহিম শহীদের আপীল খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনে শুনানি শেষে তার আপিল আবেদনটি নামঞ্জুর হয়। এর ফলে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেল মোহাম্মদ আব্দুর রহিম শহীদের। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
যেসব অভিযোগে আব্দুর রহিমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেগুলো হলো- তার দাখিলকৃত মনোনয়ন হলফনামায় সমর্থক ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির জাল স্বাক্ষর, হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া ও দ্বৈত নাগরিকত্ব।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর মৌলভীবাজার-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ আব্দুর রহিম শহীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন মৌলভীবাজার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
অন্য এক অনুসন্ধানে জানা যায়, এম এ রহিম মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা। ব্রিটেনে বসবাস করেন দীর্ঘসময় ধরে। নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন লন্ডন বাংলা এগ্রো ও এমআর এগ্রো ট্রেডিং লিমিটেড নামের শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ৯ বছরে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। কিন্তু বিগত ৯ বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক কর প্রদান করছেন না। যার কারণে নাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ ১৯ নভেম্বর ২০২৩-২৪/৭১ (৫) স্মারকে মোট ৯ বছরের বকেয়া পাওনা এক কোটি ৩৬ লাখ ৮ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ বলেন, এটা হচ্ছে হোল্ডিং কর। ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী, আয়ের ৭ শতাংশ কর দিতে হয়। তার প্রতিষ্ঠান ৯ বছর ধরে কর ফাঁকি দিয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের আইনসভার পরিচ্ছেদ ১ এর ৬৬ এর ২- এ বলা হয়েছে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিক হলে, এমন কেউ সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। তবুও এম এ রহিম এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ১৯৮২ সালে এম এ রহিম ব্রিটেনে যান। সেখানে শুরু করেন ব্যবসা। সেই সময় থেকে তিনি ব্রিটেনের নাগরিক। স্ত্রী ও সন্তানরা সবাই লন্ডনে বসবাস করেন। ব্রিটেনের স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ১৯৯০ সালে সেন্ট পিটার ওয়ার্ডে কাউন্সিলরও নির্বাচিত হন। এরপর দেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। মৌলভীবাজার শহরের সবুজবাগ এলাকায় এমআর টাওয়ার ১ ও শ্রীমঙ্গল সড়কে এমআর টাওয়ার-২ নামে দুটি ভবন রয়েছে তার। এমআর টাওয়ার-২ এর পাশে রয়েছে নিজের বসবাসের আলিশান বাড়ি। এম এ রহিমের নামে ব্রিটেনে একাধিক কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি এমআর ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মাহি মানি ট্রান্সফার অ্যান্ড ট্র্যাভেলস লিমিটেড, মাহি প্রোপার্টিজ (ইউকে) লিমিটেডের ডিরেক্টর। ২০২০ সালে লন্ডনের শ্রম আদালতে ডিডব্লিউ ইরাসমাসের করা মামলায় (মামলা নাম্বার : ১৬০১১৫৫/১৮ ঠ ) জরিমানার সাজাপ্রাপ্ত হন এম এ রহিম।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনে মোট ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিল্লুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ রহিম, জাসদের আব্দুল মছাব্বির, ওয়ার্কাস পার্টির তাপস কুমার ঘোষ, জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন ও মো. আলতাফুর রহমান, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের ফাহাদ আলম, ইসলামী ফ্রন্টের আব্দুর রউফ, জাকের পার্টির মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম, এনপিপির আবু বক্কর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেক আহমদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০০:০৩ ● ৪৮৫ বার পঠিত