।।এম এ মোহিত।।
ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বেশি করে গবেষণা করতে কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নির্দেশ দিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, গবেষণা ছাড়া উৎপাদন বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য যদি আমরা বেশি করে উৎপাদন করতে পারি, তাহলে কারো কাছে মাথা নত করে দাঁড়াবার কোন অবকাশ থাকবে না। কিন্তু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে না পারলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, যুদ্ধ-রাজনৈতিক সংঘাত, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি কারণে প্রয়োজনের সময় বিদেশ থেকে আমদানি করা যাবে না। সেজন্য, ফসলের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে, তার সবটুকু কাজে লাগিয়ে উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করতেই হবে।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিক কৃষিবান্ধব নীতির কল্যাণে বিগত ১৫ বছরে খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দেশ এখন চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ধান চাষের ফলে আগে যেখানে প্রতি বিঘাতে ৪-৫ মণ ধান হতে, সেখানে এখন বিঘাতে ৩০ মণের বেশি ধান উৎপাদন হয়। এর ফলে জনসংখ্যা বেড়ে বর্তমানে ১৭ কোটি হলেও দেশে খাদ্যের কোন ঘাটতি নেই, সংকট নেই।
বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় মিলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। বাজারে সিন্ডিকেট কীভাবে ধ্বংস করা যায়, সেটির প্রক্রিয়া চিহ্নিত করে কাজ শুরু করেছি যাতে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। হাটবাজারে যারা মজুতদারি করে তাদের অনুরোধ করবো তারা যেন এ হারাম ব্যবসা না করেন।
বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ব্রির বিজ্ঞানীরা আরও বেশি করে গবেষণা করেন। উৎপাদন যাতে আরও বেশি হয়। আমাদের বিজ্ঞানীদের যে মেধা আছে, তারা আরও এগিয়ে যাবেন। আমাদের দেশের অর্থনীতির শতকরা ৮০ ভাগ নির্ভর করে কৃষির ওপর। কৃষিকে সেভাবে সাজিয়ে তুলতে পারলে আমাদের অভাব থাকবে না। দারিদ্র্য নির্মুল হয়ে যাবে। খাদ্যে আমরা উদ্বৃত্ত থাকব।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচাক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হোমনাথ ভান্ডারি, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।